ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলায় চিকিৎসকের ভুলে মাহিনুর বেগম নামের এক রোগী জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে। এ অভিযোগ রোগীর স্বজনদের।
রোগী মাহিনুর বেগমের মা রুনু বেগম বলেন, গত ৯ ডিসেম্বর কাঠালিয়া উপজেলায় সাউদ এ্যাপোলো নামক একটি বেসরকারী ক্লিনিকে তার মেয়ের সিজারিয়ান অপারেশন হয়। অপারেশনটি করেছেন কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তাপশ কুমার তালুকদার।
রোগীর পরিবারের অভিযোগ, সিজারের সময় মাহিনুরের জরায়ু কেটে ফেলায় তার অবস্থা শংকটাপন্ন হয়ে পরেছে। কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের মৃত শাহজাহানের মেয়ে মাহিনুরকে বর্তমানে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ডাক্তার তাপস তালুকদারের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করে মাহিনুরের স্বামী নিজাম উদ্দিন খান আনন্দবার্তাকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী মাহিনুরের প্রসব জনিত ব্যথা দেখা দিলে গত ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (আমুয়া) নেয়া হলে সেখানকার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তাপস কুমার তালুকদার রোগীকে হাসপাতাল সংলগ্ন আমুয়া অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার জন্য পরামার্শ দেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৯ ডিসেম্বর মাহিনুরের সিজার করার সময় তার জরায়ু কেটে ফেলেন। পরবর্তীতে রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরন দেখা দিলে ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ ডা. তাপস ক্লিনিক থেকে মাহিনুরের নাম কেটে দিয়ে ছাড়পত্র না দিয়ে অন্যত্র চিকিৎসা নেওয়ার পরামার্শ দেন।
এদিকে মাহিনুরের শারিরীক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাকে পার্সবর্তী বেতাগী উপজেলা হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।
সেখানকার চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থা আশাঙ্কাজনক দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে প্রেরণ করেন। গত ০২ জানুয়ারী ২০২২ তারিখ এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সেখানকার চিকিৎসকের বরাত দিয়ে মাহিনুরের মা রুনু বেগম জানান, রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন, মাহিনুরের সিজারের সেলাইর স্থান এবং কেটে ফেলা জরায়ুর স্থানে পঁচন ধরেছে। আগামীকাল ৬ জানুয়ারী ২০২২ তারিখ। পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিন্ধান্ত নিবেন।
কাঠালিয়া ব্লাড ব্যাংকের পরিচালক তুহিন সিকদার বলেন, রোগীকে এপর্যন্ত১১ ব্যাগ রক্ত যোগার করে দিয়েছি। একই গ্রুপের এতো রক্ত রোগীকে সরবরাহ করা উপজেলা শহরে অনেক কষ্টকর। সিজারের রুগীর এতো রক্ত লাগে তা আগে কখনো শুনিনি।
এ বিষয়ে কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তাপস কুমার তালুকদার মুঠোফোনে আনন্দবার্তাকে বলেন, রোগীর জরায়ু কাটা না হলে রোগী বাচানো যেতোনা।