মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় প্রিজাইটিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে।
এছাড়া পাঁচটি ব্যালট বক্স ও দুটি সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার্ট বুলেট ছুড়ে। রোববার রাতে হরগজ ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকাসহ পৃথক স্থানে এমন সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। সাটুরিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, হরগজ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড চরপাড়া গ্রামের মেম্বার প্রার্থী মোঃ ফারুক হোসেন মোরগ প্রতীক ও মোশারফ হোসেন টিউওবেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করেন।
এদের মধ্যে ১ ভোটের ব্যবধান হয়।
টিউওবেল প্রতীকে মোশারফ হোসেন পেয়েছেন ৫৪৩ ভোট ও প্রতিদ্বন্দী ফারুক পেয়েছেন ৫৪২ ভোট। ওই ওয়ার্ডে ১ ভোটকে কেন্দ্র করে দুই মেম্বার সমর্থকদের মধ্যে চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে পরাজিত প্রার্থী ফারুকের সমর্থকরা প্রিজাইটিং কর্মকর্তা সঞ্জয় পালের উপর আক্রমন করেন। ভেঙ্গে ফেলা হয় ব্যালট বক্স ও সরকারি দুটি পুলিশের গাড়ি।
ওই কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এ এস আই আনিছসহ ৫ জন পুলিশ-আনসার আহত হয়।পরে পুলিশ গুলি চালালে ফারুকের সমর্থকরা ছত্রভঙ্গ করে,প্রিজাইংটি কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ রাবার্ট বুলেট ছুড়ে। এ ঘটনায় সরকারি মালপত্র ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। উক্ত ঘটনায় সাটুরিয়া থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাটুরিয়া থানার ওসি মোঃ আশরাফুল আলম।
প্রিজাইটিং কর্মকর্তা সঞ্জয় পাল জানান, দুই প্রার্থীর মধ্যে গণনায় ১ ভোটের ব্যবধান হয়েছে। কয়েকবার ভোট গণনার পরও ১ ভোটে টিউওবেল প্রতীক এগিয়ে রয়েছে। ফলাফল প্রকাশ করার পর মোরগের সমর্থকরা আমার উপর অর্তকিত হামলা করে।
পরে পুলিশ আসলে তাদেরকেও মারধর করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ফারুকের সমর্থকরা।
এদিকে মোশারফ হোসেনের টিউওবেলের সমর্থকরা আহত হলে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। এ ঘটনায় মোশারফ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
অপরদিকে বালিয়াটি ইউনিয়নের ভাটারা ২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার প্রার্থী চাঁনমিয়া আনন্দ মিছিল বের করলে পরাজিত প্রার্থী মিজানের সমর্থকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা বিজয়ী প্রাথীর সমর্থকদের চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এতে মেছের আলী, সাগর হোসেন ও তোফাজ্জল হোসেন গুরুতর আহত হয়। আহতদের সাটুরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে ফুকুরহাটি ইউনিয়নের কান্দাপাড়ায় দুই মেম্বার সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে।
সাটুরিয়া থানার ওসি মোঃ আশরাফুল আলম জানান, নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় পৃথক তিন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করে। আর হরগজের চরপাড়ায় প্রিজাইটিং কর্মকর্তা ও পুলিশ এবং সরকারি মালপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে। একটি মামলার বাদী পুলিশ অপরটি মোশারফ হোসেন। আসামীদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে বলে জানান তিনি।