দক্ষিণাঞ্চলের কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির কথা চিন্তা করে নির্মান করা হয় পটুয়াখালীর দশমিনায় দেশের বৃহত্তম বীজ বর্ধন খামার। কিন্তু তেঁতুলিয়া নদীর অব্যাহত ভাঙনের কবলে গত ৫ বছরে খামারটির ২৮০ একর জমি তেঁতুলিয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনরোধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পুরো খামারটিই যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য চাহিদানুযায়ী বীজের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন উন্নত জাতের বীজ উৎপাদনের লক্ষে বীজ বর্ধন খামার প্রতিষ্ঠার উদ্দ্যেগ গ্রহন করেন।
তার‘ই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার চর বাঁশবাড়িয়া ও চর বোথাম এবং চর হায়দারে ১০৪৪.৩৬ একর জমির উপরে ২৫০ কোটি টাকা প্রাথমিক ব্যয়ে নির্মান করা হয় দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম বীজ বর্ধন খামার।
দশমিনা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব কোনে তেঁতুলিয়া নদী পার হয়ে বীজ উৎপাদন খামারটির অবস্থান। শুরু থেকে খামারটি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) প্রকল্প পরিচালকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় এবং পরবর্তীতে খামারটির জন্য বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ক্রয়সহ অফিস ভবন, গুদাম ভবন, শষ্য মাড়াইয়ের স্থান ও বীজ শুকানোর স্থানসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে এসব অবকাঠামোর সবই নদী ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
দেখা গেছে, তেঁতুলিয়া নদীর অব্যাহত ভাঙনের ফলে খামারের ইটের রাস্তাটির অধিকাংশই ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। খামারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ঝুঁকির মধ্যে পরেছে। খামারে বেড়িবাঁধ ও স্লুইজ গেট না থাকায় মৌসুমে অতিরিক্ত জোয়ারে পানি উঠে বীজের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
খামার কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, খামারটিতে গম, আলু, সূর্য্যমুখী, মশুর, মুগ,সয়াবিন ও তীল বীজ উৎপাদন হতো। গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ২৫৫.৭০ টন আমন ও ৩১১.৪০ টন বোরো বীজ উৎপাদিত হয়েছে। এছাড়াও ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে ১৮০.৯৬ টন আমন বীজ এবং ২২৯.৩৬ টন বোরো ও রবি শষ্য বীজ উৎপাদন হয়েছিল।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে, তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙনের ফলে খামারটি হুমকিতে রয়েছে। ভাঙন এলাকা পরির্দশন করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।