কীর্তনখোলা নদীতে ঝাঁপ দিয়েও রক্ষা হলোনা বরিশাল জেলা পুলিশের কনেস্টাবল কাওছার আহম্মেদের। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িওয়ালার ১৯ বছরের মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষন ও অন্তঃসত্তা করার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, মামলার বাদী ও ভিকটিম করুনীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য এরইমধ্যে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) তে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে গ্রেফতার কাওছার আহম্মেদ বরিশাল জেলা পুলিশের কনেস্টাবল হিসেব পুলিশ হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন বলে জানাগেছে। তিনি বরগুনা জেলা সদরের আমড়াঝুড়ি এলাকার আলম শিকদারের ছেলে। তবে চাকুরির সুবাদে কাওসার বরিশাল নগরের দক্ষিন আলেকান্দা এলাকার বুকভিলা গলির একটি বাসায় ভাড়া থাকতো।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, পুলিশ সদস্য কাওছার আহম্মেদ গত জানুয়ারি মাস থেকে স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে বুকভিলা গলির ভিকটিমের বাবার মালিকানাধীন ফ্লাট বাসায় ভাড়া ওঠেন।
সেই সুবাদে বাড়ির মালিকের ১৯ বছরের মেয়ে ও ভিকটিমের সাথে বিভিন্ন সময়ে সখ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে ভিকটিমের সরলতার সুযোগ নিয়ে কাওসার তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন। এরপর গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বিভিন্ন সময়ে কিশোরিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষন করে।
পরবর্তীতে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পরলে তার মা ও খালাকে বিষয়টি অবহিত করেন এবং গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্মরনাপন্য হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন ভিকটিম প্রায় ২০ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা।
যদিও থানা পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছেন, ওই তরুণীর মাত্র ২ মাস আগে বিয়ে ঠিক হয়। যার কিছুদিন পরেই তরুনী জানতে পারেন সে অন্তঃসত্তা। আর অন্তঃসত্তার বিষয়টি জানতে পেরে লুকোচুরি শুরু করে পুলিশ সদস্য কাওছার। তাকে আজ বরিশাল নগরের ত্রিশ গোডাউন এলাকায় খুজে পায় ভিকটিম। এরপর ৯৯৯ এর মাধ্যমে থানা পুলিশকে অবহিত করে সে।
যদিও সেখানে কাওছারকে আটক করার চেষ্টা করা হলে সে দৌড়ে কীর্তনখোলা নদীতে ঝাপ দেয়। পরে ওই দুই নারী পুলিশ সদস্যদের নিয়ে একটি ট্রলারে করে মাঝ নদী থেকে কাওসারকে আটক করে।
যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে।
ত্রিশ গোডাউন এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, ওই দুই নারী ও একজন পুলিশ সদস্য কাওসারকে আটকের পর বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছিলেন। এরপর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গাতে যাচ্ছিলেন, এরমাঝেই কাওসার এক নারীর সাথে ধস্তাধস্তি করেন।
আর এরমাঝেই কাওসার দৌড় দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, তবে ওই তিনজনের ধাওয়া খেয়ে সে নদীতে ঝাঁপ দেয়। পরে ট্রলার নিয়ে তাকে মাঝ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।
এরপর থানা পুলিশের গাড়ি আসলে তাকে সেটিতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে নদীতে ঝাঁপ দেয়ার বিষয়টি শুনেছেন বলে জানিয়ে ওসি আজিমুল করিম বলেন, ৯৯৯ এর ফোন পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের সদস্যরা সেখানে যান এবং ওই পুলিশ সদস্যসহ ভিকটিমকে নিয়ে থানায় আসেন। ভিকটিম থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়।