বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বঙ্গোপসাগরের ভারতীয় পতাকা বাহি ফিশিং ট্রলার এবং ৩১ জন জেলে আটক দশমাইল-কলেজ মোর রুটে গাড়ির সর্বনিম্ন গতি চায় হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা বরিশালে ভুয়া সাংবাদিক আটক বরিশালে কোটি টাকার কারেন্ট জাল জব্দ সদ্য সমাপ্ত দুর্গাপূজা সংক্রান্তে মতবিনিময় করলেন পুলিশ কমিশনারের ছাত্র আন্দোলনে ময়মনসিংহের শহীদ শাহরিয়ার পেল জিপিএ-৪.৮৩ শ্রীমঙ্গলে সংরক্ষিত বন থেকে অজ্ঞাতার নারী’ চা বাগান থেকে রক্তাক্ত পুরুষের লাশ উদ্ধার পৃথিবীকে বাঁচাতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। – পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দেশে টোপ-চার নকল করতে ভয়ংকর যশোরের মিঠু বরিশালে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

দুর্গন্ধের শহরে পরিণত হয়েছে নোয়াখালী পৌরসভা

মো. ইসমাইল হোসেন, নোয়াখালী
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১
  • ১৩৯ বার

বাংলাদেশে যে কয়েকটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা রয়েছে তার মধ্যে নোয়াখালী পৌরসভা অন্যতম । ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নোয়াখালী পৌরসভা।

 

প্রতিষ্ঠার ১৪৫ বছরেও নিয়মিত কর এবং ট্যাক্স দিয়েও যেনো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে না নোয়াখালী পৌরবাসী। নোয়াখালী পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই পৌরসভায় নগর পিতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে ১০ জন নির্বাচিত মেয়র,৩ জন প্রশাসক,২ জন ভারপ্রাপ্ত ও ১ মনোনীত মেয়র।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিশ্বের বুকে নিজেদের বুদ্ধিমত্ত্বা,শক্তি এবং বিচক্ষণতার সহিত যারাই এগিয়ে গিয়েছে,তারাই সফলতা অর্জন করতে পেরেছে। ঠিক যেমনি ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তখন থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় আমাদের সোনার বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যখন পূর্ব পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলো,তখনো বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আর বর্তমানেও বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন সেই আওয়ামীলীগ।
বর্তমান আওয়ামী সরকারের ক্ষমতাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পৃথিবীর বুকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে আমাদের এই বাংলাদেশ। দেশনেত্রী শেখ হাসিনা যখন বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে অন্যন্য শক্তি ও ক্ষমতাধর বাংলাদেশ হিসেবে পরিচিতির কাজে ব্যস্ত, ঠিক তখনই দেশের ভিতরেই সেই উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত করতে নানান ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে একশ্রেণীর মুখোশ ধারী হাইব্রিড আওয়ামীলীগ। যারা দেশ এবং দলের জন্য নয়,রাজনীতিতে এসেছে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে নিজেদের পকেট ভারী করার উদ্দেশ্যে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বশেষ ক্ষমতায় আসার পর থেকে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ যেনো এক টুকরা হিরায় পরিণত হয়েছে। নোয়াখালীতে এলোমেলো আর অগোছালো আওয়ামী লীগ কে সুসংগঠিত করতে এবং দেশ নেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে রাত দিন এক করে নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগ কে নতুন প্রাণ এনে দিয়ে ছিলেন নোয়াখালী সদর-সূবর্ণচর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী।
একরামুল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগ যেমন ছিলো শৃঙ্খল,তেমনি ছিলো সুসংগঠিত ।
কিছুদিন আগ পর্যন্ত নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থাকলেও সেই কমিটি ভেঁঙে নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার পরও নেতা কর্মীরা যেনো একরামুল করিম চৌধুরী ছাড়া অন্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নোয়াখালীতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।
এদিকে সংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর উন্নয়ন বাঁধা গ্রস্ত করতে নানান অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে কিছু কিছু আওয়ামী মুখোশ ধারী হাইব্রিড নেতা। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে সু-কৌশলে কমিটি থেকে সরিয়ে দিয়ে জেলা শহর মাইজদী তে দূর্নীতি আর অনিয়মের মহোৎসবে মেতে উঠেছে মুখোশ ধারী আওয়ামী লীগের কিছু নেতা।
যার প্রমাণ স্বরূপ বলা যায়,জেলা শহর মাইজদীর বুকে অনেক ইতিহাস নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মিলিসিরি বাজার বা পৌর বাজার নামের বাজার টি। নোয়াখালী পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ১৪৫ বছরের মধ্যে ময়লা-আবর্জনার এমন র্দূগন্ধে কখনোই পড়তে হয়নি নোয়াখালী পৌর বাসীকে।
বর্তমানে জেলা শহর মাইজদী তে অবস্থিত পৌর বাজারের পেছনের দিকে খালি জায়গায় ফেলা হচ্ছে পুরো শহর এবং আশপাশের অনেক জায়গার ময়লা আবর্জনা। ময়লা আবর্জনা গুলো ফেলার পরে পৌরসভা থেকে র্দূগন্ধ কাটানোর জন্য নেওয়া হচ্ছে না কোনো ধরনের পদক্ষেপ। আর এতে করে অস্বস্তিতে পড়েছে বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা সাধারণ ও বিক্রেতা গণ। পৌর বাজারের পেছনের যে অংশে র্দূগন্ধযুক্ত ময়লা গুলো ফেলা হচ্ছে তার একপাশে অবস্থিত নোয়াখালী জিলা স্কুল এবং অন্য পাশে অবস্থিত রয়েছে মানুষের বসতবাড়ি।
পৌর বাজার এলাকার উপর দিয়ে চলাচল করতে গেলে মনে হয় যেনো,অজোপাড়া গাঁয়ের র্দূগন্ধ যুক্ত এলাকার উপর দিয়ে চলাচল করা হচ্ছে। জেলা শহর মাইজদীর বুকে রয়েছে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও শতাধিক প্রাইভেট হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব সরকারি,বেসরকারি প্রাইভেট হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর সমস্ত ময়লা আবর্জনা গুলো এনে ফেলা হচ্ছে এই পৌর বাজারেই। আর তাতে করে প্রতিনিয়ত মারাত্মক ভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে বাজার করতে যাওয়া সাধারণ ক্রেতা,স্কুলে পড়তে আসা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সহ বাজারের আশেপাশে বসবাস করা পরিবার গুলো।
এবিষয়ে নোয়াখালী জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন মোঃ জাহাঙ্গীর বলেন, পৌরসভা এবং পৌর মেয়রের কাছে আমরা রীতিমতো অসহায়। ময়লা আবর্জনা গুলোর র্দূগন্ধে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মারাত্মক ভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে বলে আমরা একটা ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছি। তারপরও কোনো ভাবেই ময়লার র্দূগন্ধে অন্যান্য ভবনের শ্রেণী কক্ষ গুলোতে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না এবং আমরা অফিসেও বসতে পারছি না।
এমন অস্বস্তিতে যুক্ত ময়লা আবর্জনার র্দূগন্ধ থেকে রক্ষা পেতে এবং ছাত্র ছাত্রীদের পড়ালেখার জীবন মান স্বাভাবিক করতে আমরা বার বার লিখিত এবং মৌখিক ভাবে পৌর মেয়র শহিদুল্লাহ খাঁন সোহেলের কাছে আবেদন করেও এর কোনো প্রতিকার পাইনি।
এদিকে সরেজমিনে পৌর বাজারের পেছনের দিকে ফেলা ময়লা গুলো দেখতে গেলে ব্যবসায়ী এবং ক্রেতা সাধারণের অস্বস্তির কথা জানতে গেলে দেখা যায়,পৌরসভা এবং পৌর পিতার এমন কর্মকান্ডে তারা রীতিমতো ক্ষিপ্ত।
কিছু কিছু ব্যবসায়ীর সাথে কথা বললে তারা জানান যে,মেয়র সরকার দলীয় লোক,তাই মেয়র তার মন মতো যা ইচ্ছে তাই করবে, তাতে মেয়রকে কারো কিছু বলার নেই এবং কেউ কিছু বলতেও পারবে না,মেয়র কারো কোনো কথাও শুনবে না।
কিছু দিন পর পর ব্যবসায়ীরা এক হয়ে পৌর ভবনে গেলে মেয়র তাৎক্ষণিক কিছু ব্লিসিং পাউডার অথবা সাময়িক র্দূগন্ধ বন্ধ হওয়ার জন্য কিছু কেমিক্যাল ছিঁটিয়ে দেয়। তারপরে আবার মাসের পর মাস চলে গেলেও আর কোনো খবর থাকে না পৌর মেয়র শহিদুল্লাহ খাঁন সোহেলের।
এদিকে বাজারের পেছনের অংশে ফেলা ময়লা গুলোর র্দূগন্ধে প্রতিদিনই কমছে ক্রেতা সাধারণ। এতে করে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। পৌর বাজারের আশে পাশে ঘরবাড়ি করে বসবাস করা মানুষ গুলোও পড়েছে নানা অস্বস্তির মুখে। তাদের মধ্যে থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা জানান,দিন রাত ২৪ ঘন্টা আমি সহ আমার আশেপাশের বাসা গুলোতে বসবাস করা মানুষ গুলোর মুখে খাবার না জুটলেও ২৪ ঘন্টাই তাদের নাকে জুটে মেয়র শহিদুল্লাহ খাঁন সোহেলের উপহার দেওয়া ময়লা আবর্জনার র্দূগন্ধ।
৯০ দশকের ত্যাগী,সংগ্রামী ছাত্রলীগ ও বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতা লুৎফুন হায়দার লেলিন বলেন,
যেখানে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা কর এবং ট্যাক্স বাবদ পৌরসভার ভিতরে থাকার এবং ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করার জন্য দিতে হয়,সেখানে টাকা দিয়ে ভাড়া থাকার পরও মিলছে না সেই কাঙ্ক্ষিত সেবা।
মেয়র শহিদুল্লাহ খাঁন সোহেলের ক্ষমতাকালে সবচেয়ে বেশি র্দূভাগা আর অবহেলিত হয়েছে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় বসবাস করা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে সর্বস্থরের জনগণ। দ্রুতই যদি মেয়র শহিদুল্লাহ খাঁন সোহেল পৌর বাসীকে এই র্দূগন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়ার ব্যবস্থা না করে,তাহলে অচিরেই তার ক্ষমতা বিলুপ্ত হবে এবং ট্যাক্সের টাকা পৌর বাসীর জন্য কোন খাতে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এসব অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনা থেকে কবে পৌর বাসী মুক্তি পাবে, এমন প্রশ্নও মেয়র শহিদুল্লাহ খাঁন সোহেলের কাছে রাখেন লুৎফুন হায়দার লেলিন।
এদিকে নোয়াখালী পৌরসভার স্থায়ী বাসিন্দা ও আগামী পৌরসভা নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল গণি রিংকু পৌর মেয়র শহিদুল্লাহ খাঁন সোহেল কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন,পৌর পিতা শহিদুল্লাহ খাঁন সোহেল যদি আমাদের নাকের সামনে থেকে এই র্দূগন্ধ যুক্ত ময়লা আবর্জনা সরাতে ব্যর্থতা প্রকাশ করেন,তাহলে তিনি আমাকে বলতে পারেন,আমি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পৌর বাসীকে এই র্দূগন্ধ থেকে মুক্তি দিবো এবং কাজের বিনিময়ে তিনি শুধু পৌরসভায় বসে শ্রমিকদের টাকা দিবেন আর আমি এই ময়লা আবর্জনা এখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিবো।
এদিকে পৌর বাসীর এমন দূর্ভোগ লাগবে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র শহিদুল্লাহ খাঁন সোহেলের কাছে পুনরায় অনুরোধ জানিয়েছে সমাজের সংশ্লিষ্ট সকল সচেতন মহল ও নোয়াখালী পৌরসভার সকল জনসাধারণ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 anondobarta24.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com